সিলেট মহানগরেই ত্রাণের জন্য হাহাকার

BanglaPost21

অসলাইন ডেস্ক:
বন্যাকবলিত খোদ সিলেট মহানগরেই চলছে ত্রাণের জন্য হাহাকার। দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির অভাব, মিলছে না খাবার। চরম দুর্বিষহ পরিস্থিতিতে এখন বহু মানুষ।

সিলেট শহরে বন্যা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৫৫ হাজার। এদের মধ্যে ২০টি আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন প্রায় তিন হাজার মানুষ।

উজানে পাহাড়ি ঢলের পানি ঢুকে পড়া ও ভারী বর্ষণে দ্বিতীয় দফায় বন্যা আক্রান্ত হয়েছেন সিলেট, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জসহ কয়েক জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ।

এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত সিলেটের মানুষ, এই সংখ্যা সাড়ে নয় লাখের মতো। এদেরকে ১০ লাখ টাকার বিশেষ বরাদ্দ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান।

সিলেট মহানগরের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা সুরমার নদীর পানি গত ১৭ জুন রাতে হঠাৎ করে বেড়ে দুকুল ছাপিয়ে শহরের মধ্যে ঢুকে পড়ে। মুহূর্তেই তলিয়ে যায় মহানগরের উপশহর এলাকা।

কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিচু এলাকার বসতি যায় ডুবে। তারপর থেকেই পানিবন্দি হয়ে দুর্বিষহ দিন পার করছেন সেখানকার বাসিন্দারা।

দুর্ভোগে ঘর ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন অনেকে। আবার অনেকের জায়গা না মেলায় পানিতেই ভিজে আছেন নিজ ঘরে। কিন্তু সেই ঘরে খাবার জুটছে না। রয়েছে সুপেয় পানির সংকট।

শুধু উপশহরই নয়, তেরো রতন শেখ ঘাট, যতরপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় এখনো পৌঁছেনি সরকারি কোনো ত্রাণ।

ডুবে যাওয়া এক বাড়িতে ভাড়া থাকা এক নারী বললেন, আমরা বন্যার পানিতে ডুবে গেছি। কিন্তু সরকার থেকে তো কোনো সাহায্য পাই না।

তার আশঙ্কা, তিনি এখন কোনো কাজে যেতে পারছেন না। এর ওপর সংসার। আবার বাসা ভাড়া কীভাবে দেবেন তা নিয়েও দুশ্চিন্তায় আছেন ওই নারী।

এক তরুণ বলছেন, বন্যা শুরুর পর থেকেই তিনি আর কাজে যেতে পারেননি। কোথা থেকে কোনো খাবার বা সহযোগিতা কিছুই তিনি পাননি বলে জানালেন।

বন্যাদুর্গত এই মানুষগুলোর এখন একমাত্র ভরসা ত্রাণ। তবে তাদের সেই মৌলিক চাহিদা পূরণ হচ্ছে না এখনো। এক বেলা খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে, মিলছে না সহায়তাও।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে দুর্গতদের সর্বোচ্চ সহায়তা করা হবে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান এদিন বন্যাকবলিত সিলেটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখেন।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, দুর্যোগ দেখা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা এসেছি। এখনই আমরা ১০ লাখ টাকার ক্যাশ ঘোষণা করলাম। সঙ্গে আরো দেয়া হয়েছে ১০০ মেট্রিকটন চাল এবং দুই হাজার প্যাকেট খাবার।

প্রাথমিকভাবে এই দেওয়া হয়েছে এবং এরপর যেখানে যা দরকার আমরা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

সিলেটের কুশিয়ারা নদীর চারটি পয়েন্টে এবং সুরমা নদীর দুটি পয়েন্টে এখনো বিপদসীমার উপরে নদীর পানি বইছে। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি বইছে বিপদসীমার ১০২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে।

তথ্য ও ছবি: একাত্তর টিভি অনলাইন।