বরগুনা প্রেসক্লাবে হামলা ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা

BanglaPost21

বরগুনা ব্যুরো_
বরগুনা প্রেস ক্লাবের সদস্যদের উপর হামলা  পাল্টা হামলার ঘটনায় বরগুনা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাদী হয়ে ১৭ জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সকালে দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করেছেন। বরগুনার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: শরিয়ত উল্লাহ মামলাটি গ্রহন করে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এজাহার গ্রহন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে
(পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা যায়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারী সকাল অনুমান ১০ বরগুনা প্রেসক্লাবের নিজস্ব ভবনের তৃতীয় তলায় ‘অবস্থিত প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আসামী সাংবাদিক তালুকদার মোঃ মাসুদ মাসুদ, সাংবাদিক মুশফিকুল ইসলাম আরিফ, সাংবাদিক এম. হারুন অর রশীদ রিংকু, সাংবাদিক সগির হোসেন,  সাংবাদিক শাজনুস শরীফ, আল-আমিন,
সাংবাদিক জাফরুল হাসান রুহান, রাকিবুল ইসলাম রাজন খান, সাংবাদিক মোঃ মিরাজ, মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম, সাংবাদিক সানাউল্লাহ, সাংবাদিক জহিরুল ইসলাম, জুয়েল মোল্লা, রিমন, সাংবাদিক জুলহাস, রিমন মিয়া, সাংবাদিক মোঃ রাশেদ আহম্মেদ বশির সহ অজ্ঞাত ২০/২৫ জন। এরা একজোট হয়ে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে দেশীয় অস্ত্র ও লাঠি সোটা নিয়ে বরগুনা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে হামলা, লুটপাট ও জোর পূর্বক জবর দখল করার জন্য আসে। আসামী মুশফিরুল ইসলাম আরিফ প্রেসক্লাবের অফিস সহায়কে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে প্রেসক্লাবের তালা খোলতে বাধ্য করে। এর সাথে সাথে অন্যান্য সকল আসামীরা প্রেসক্লাবে প্রবেশ করে। আসামীরা ত্রাস সৃষ্টি করে সদস্যদের হাজিরা খাতা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত স্বপন দাসের শোক বইসহ অন্যান্য খাতা-পত্র ছিনিয়ে নেয়। এ ছাড়া প্রেসক্লাবের রেজুলেশন ও ক্যাশ বই, চেক বই আলমীরা থেকে বের করার চেষ্টা করে। অফিস সহায়ক ইব্রাহীম প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সোহেল হাফিজকে মোবাইল ফোনে জানান  তিনি তাৎক্ষনিক প্রেসক্লাবে ছুটে আসেন। একটু পরে প্রেস ক্লাবের অন্যান্য সদস্যরা ঘটনা স্থলে আসেন। আসামী সাংবাদিক তালুকদার মোঃ মাসুদ মাসুদ, সাংবাদিক মুশফিকুল ইসলাম আরিফ, সাংবাদিক এম. হারুন অর রশীদ রিংকু, সগির হোসেন, সাংবাদিা শাজনুস শরীফ,  আল-আমিন কতিপয় প্রেস ক্লাবের সদস্যদের উপর চড়াও হয়। তাহাদেরকে শারীরিক ভাবে মারপিট করে। বাদী মো: জাফর হাওলাদার বলেন,সকল আসামীরা ত্রাস সৃষ্টি, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং লুটপাট অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। আসামীরা সোহেল হাফিজ ও মালেক মিঠুকে রুম হতে জোড় পূর্বক বের করে আনে। সাংবাদিকদের দৈনন্দিন কার্য সম্পাদনে বাধা সৃষ্টি করে। আসামীদের তান্ডবের কর্মকান্ড নিয়ে ২৬ ফেব্রুয়ারী প্রেসক্লাবের জরুরী সভায় উপস্থিত সকল সদস্যদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের আলোকে আমরা মামলা করি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ১৯ ফেব্রুয়ারী প্রেসক্লাবে আসামীরা যে জঘন্য ঘটনা ঘটিয়েছে এরপর  তাদের সঙ্গে সমঝোতায় আমরা বসতে চেয়েছি। আমরা নিরব ছিলাম। আমরা দেখতে পেলাম মুশফিক আরিফ একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে। আমাদের সম্মান নস্ট করার কারনে মামলা করেছি। তবে তিনি বলেন, সমঝোতার দ্বার এখনো বন্ধ হয়ে যায়নি। জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন যদি সমঝোতার উদ্যোগ নেয় আমরা সমঝোতায় বসতে রাজি আছি। কেন প্রেস ক্লাবের সদস্যদের হামলা করা হয়েছে। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কেহ সদস্য হতে চাইলে প্রেস ক্লাবে আবেদন করবে। গঠনতন্ত্র মোতাবেক তাদের সদস্য করা হয়ে থাকে।
এ ব্যাপারে প্রধান আসামী মুশফিকুল ইসলাম আরিফ বলেন, আমাকে কেন মামলা দিয়েছি তা আমি জানি না। তারা আমাকেসহ অনেককে লাঞ্ছিত করেছে। তালুকদার মাসুদ প্রেস ক্লাবে গেছে তাকেও মারধর করে। কী ভাবে মারধর করেছে তার ভিডিও ফুটেজে আছে। আমি প্রেস ক্লাবের সদস্য। আমাকে আসামী দিলে অন্য সদস্যরাও আসামী হবে। তিনি বলেন, বরগুনা প্রেস ক্লাবটিকে কয়েকজন মিলে কুক্ষিগত করে রেখেছেন। যোগ্য সাংবাদিকেরা বরগুনা প্রেস ক্লাবে সদস্য হবার সুযোগ পাচ্ছেন না। তাদের মনের মত হলেই তারা সদস্য হতে পারবে। আমরা চাই বরগুনা প্রেস ক্লাব হবে যোগ্যদের জন্য উম্মুক্ত। সমঝোতার ব্যাপারে তিনি বলেন, ১৯ ফেব্রুয়ারী প্রশাসনের সামনে যৌথভাবে বলা হল ২ মার্চ সমঝোতায় বসবে। হঠাৎ করে প্রেস ক্লাব আমার নামেসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করে। তিনি আরও বলেন, আমরা এখনো সমঝোতায় বসতে রাজি আছি।