বরগুনা ব্যুরো:
বরগুনা প্রেসক্লাবে ক্যারাম খেলাকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ঘটনায় পূর্বে জামিনে থাকা ৭ জন সাংবাদিকের জামিনের আবেদন নাকচ করে জেল হাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার বরগুনার অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: হারুন অর রশিদ এ আদেশ দিয়েছেন। আসামীরা হল, সাংবাদিক মুশফিকুল ইসলাম আরিফ, এম হারুন অর রশিদ রিংকু, সগির হোসেন, শাসনুজ শরীফ, আল আমীন, জাফরুল হাসান রুহান ও রাকিবুল ইসলাম রাজন খান।
জানা যায়, বরগুনা প্রেসক্লাবে ১৯ ফেব্রুয়ারী বেলা ১১ টার সময় ক্যারাম খেলতে যায় সাংবাদিক তালুকদার মাসউদসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক। প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সোহেল হাফিজ তাদের ক্যারাম খেলতে নিষেধ করেন। এই বিষয় নিয়ে উভয়ের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা পরে তালুকদার মাসউদকে প্রেসক্লাবে আটকে বেধড়ক মারধর করে সোহেল হাফিজ গ্রুপ। তালুকদার মাসউদ দীর্ঘদিন চিকিৎসায় থাকা অবস্থায় ২ মার্চ মারা যায়। এর আগে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাফর হাওলাদর বাদি হয়ে তালুকদার মাসউদসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ২৯ ফেব্রুয়ারী দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করে। সেই মামলায় মুশফিকুল ইসলাম আরিফসহ সকল ১৬ জন আসামী ৩ মার্চ জামিনে মুক্তি পায়। জামিন মুক্ত আসামীরা বিগত দিনে নিয়মিত আদালতে উপস্থিত ছিল।
বৃহস্পতিবার ওই আদালতে আসামী মুশফিকুল ইসলাম আরিফ, এম হারুন অর রশিদ রিংকু, সগির হোসেন, শাসনুজ শরীফ, আল আমীন, জাফরুল হাসান রুহান, রাকিবুল ইসলাম রাজন খানসহ ১৬ স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে ওই ৭ জনের আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেয় আদালত।
আসামী পক্ষের আইনজীবী কেএম শফিকুল ইসলাম বলেন, একটি মিথ্যা মামলায় আমাদের আসামীরা অস্থায়ী জামিনে ছিল। বাদি পক্ষ ৭ জনের জামিন বাতিল চেয়ে আবেদন করেছে। কখন কোথায় বসে বাদিকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে তা জামিন বাতিলের আবেদনে নেই। এ ছাড়া আসামী সগিরের বিরুদ্ধে জামিন বাতিলের আবেদন ছিল না। তার জামিনও বাতিল করেছে আদালত। তিনি বলেন, বাদি জাফর হাওলাদার তালুকদার মাসউদ হত্যা মামলার আসামী। হাই কোর্ট তাকে আগাম জামিন দেয়নি। এই আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে জামিন বাতিলের আবেদন করে। এ আদেশের বিরুদ্ধে আমরা দায়রা আদালতে যাব।
বাদি পক্ষে কোর্ট সিএসআই বলেন, আসামীরা জামিনে গিয়ে জামিনের শর্ত ভঙ্গ করেছে। যার কারনে আদালত ৭ জনের জামিনের আবেদন না মঞ্জুর করেছে।
উল্লেখ, ১৯ ফেব্রুয়ারী বরগুনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক তালুকদার মাসউদকে আটক করে মারধর করে। ২ মার্চ তালুকদার মাসউদ মারা যায়। মাসউদের স্ত্রী বাদি হয়ে সোহেল হাফিজসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করে। সেই মামলায় ১০ জন জেল হাজতে রয়েছে। এর আগে ২৯ ফেব্রুয়ারী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাফর হাওলাদার বাদি হয়ে ১৭ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা করে।