বরগুনা ব্যুরো:
স্ত্রীর নিকট যৌতুক দাবী করে না পেয়ে স্ত্রীকে নির্যাতন করার অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হওয়ায় স্বামীকে দুই বছর সশ্রম কারাদন্ড, দশ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও সিনিয়র জেলা জজ মো: মশিউর রহমান খান এ রায় ঘোষনা করেন। রায় ঘোষনার সময় আসামী আদালতে ছিল। দন্ডপ্রাপ্ত আসামী হল, বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার মধ্যে ধামুরা গ্রামের সুলতান সিকদারের ছেলে মোঃ জাকির সিকদার (৩৩) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বিশেষ পিপি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল।
জানা যায়, দন্ডপ্রাপ্ত আসামীর স্ত্রী শারমিন আক্তার হামিদা ওই ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন, তিনি বরগুনা সদর উপজেলার দক্ষিন লাকুরতলা গ্রামে বাবার বাড়ি থাকেন। আসামীর সঙ্গে তার ২০১১ সালের ২৮ অক্টোবর বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তার স্বামী যৌতুক দাবী করে বিভিন্ন ভাবে তাকে জ্বালা যন্ত্রনা দিতে থাকে। এক পর্যায়ে বাদি তার বাবার বাড়িতে চলে আসে।
ঘটনার দিন ২০১৪ সালের ১১ ডিসেম্বর বিকাল ৪ টার সময় বাদীর পিতার উত্তর ভিটির বসত ঘরের মধ্যে বসে ওই আসামী বাদির বাবার নিকট দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে। বাদির পিতা যৌতুক দিতে অস্বীকার করলে আসামী রাগ করে চলে যাওয়ার সময় বাদি তার পথ আগলে ধরে। এমন সময় ওই আসামী যৌতুক না পেয়ে উত্তেজিত হয়ে বাদিকে মারধর করে চলে যায়। বাদি গুরুতর অসুস্থ হয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে বরগুনা থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। পরে বাদি ওই ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। ট্রাইব্যুনাল সাক্ষ্য শেষ করে উপরোক্ত দন্ড প্রদান করেন।
বাদি ট্রাইব্যুনালের রায় সন্তুষ্ট হয়ে বলেন, আমার স্বামী আমাকে যৌতুক দাবী করে অমানসিক নির্যাতন করে বাবার বাড়িতে ফেলে রেখেছেন। ২০১৪ সাল হতে আমার কোনো খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামী আদালতের বারান্দায় বসে বলেন, বাদিকে নিয়ে আমি আর সংসার করব না। অল্প দিনের মধ্যে আইনজীবীর মাধ্যমে আমি হাই কোর্টে আপীল করে জামিন চাইব। তিনি আরও বলেন, আমি থাকি ঢাকা। বাদির বাবার বাড়ি কোনোদিন এসে যৌতুক চাইনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে।