বরগুনা ব্যুরো:
বরগুনা প্রেসক্লাবে আটকে রেখে মারধরে নিহত সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ হত্যা মামলায় সাত আসামীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে বরগুনার অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। বৃহষ্পতিবার সকালে সাতজন আসামী স্বেচ্ছায় আত্মসমার্পন করলে ম্যাজিস্ট্রেট মো: হারুন অর রশিদ তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। বরগুনার কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক অশোক কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, বরগুনা প্রেসক্লাবের আধিপত্য বিস্তার কেন্দ্র করে ১৯ ফেব্রুয়ারী কতিপয় প্রেসক্লাব সদস্যরা তালুকদার মাসউদের উপর হামলা করে। মাসউদ আহত হলে কয়েক দফা চিকিৎসা শেষে ২ মার্চ চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়। মাসউদের স্ত্রী সাজেদা সাজু বাদি হয়ে ৪ মার্চ বরগুনা থানায় ১৩ জনকে আসামী করে একটি মামলা করে। বরগুনা প্রেসক্লাবের সদস্য প্রধান আসামী আ স ম হাফিজ আল আসাদ,(এনটিভি) আরিফুল ইসলাম মুরাদ,( এনটিভির ক্যামেরা ম্যান) কাশেম হাওলাদার,( সংবাদ প্রকাশ) সাইফুল ইসলাম মিরাজ,(সময় টিভি) ওয়ালি উল্লাহ ইমরান, (আজকের দর্পন) জাহিদুল ইসলাম মেহেদি,( বাংলা নিউজ) সোহাগ হাওলাদা ও জাফর হাওলাদার (মোহনা টিভি) বৃহস্পতিবার স্বেচ্ছায় ওই আদালতে আসামীরা আত্মসমার্পন করেন। জামিন শুনানী শেষে ১৩ নম্বর আসামী জাফর হাওলাদারকে জামিন মঞ্জুর করেন। বাকি সাতজন আসামীর জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে বরগুনা জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। বাকি ৫ আসামী পলাতক রয়েছে। পলাতক আসামীরা হলো, ফেরদৌস খান ইমন ( যমুনা টিভি) ছগির হোসেন টিটু, আবদুল মালেক মিঠু ( ডিবিসি টিভি) এস এম সিফাত ও সহিদুল ইসলাম সহিদ।
এর আগে মঙ্গলবার মহামান্য হাই কোর্টে ওই আসামীরা অন্তরবর্তিকালিন জামিনের আবেদন করেলে তাদের জামিন মহামান্য হাই কোর্ট বিবেচনা করেনি।
মঙ্গলবার নিহত মাসউদের স্ত্রী সাজেদা সাজু, মেয়ে তন্নি ও ছেলে তানহা বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পূর্ব গেটে বটতলায় ব্যানার প্লাকাট নিয়ে সাংবাদিক মাসউদ হত্যার আসামীদের গ্রেফতার দাবি জানান। মাসউদ হত্যার বিচার ও আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে বরগুনা শহর যখন উত্তাল হয়ে উঠে পরের দিন বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার।
আসামীদের পক্ষের আইনজীবী আবদুর রহমান বলেন, তালুকদার মাসউদ হত্যা মামলার আসামীদের মধ্যে মোট আটজনকে অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করিয়ে তাদের পক্ষে জামিন আবেদন করি। আদালত ১৩ নম্বর আসামী জাফর হাওলাদার ঘটনার সময় ভারত ছিল। এমন তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে তাকে জামিন দিয়েছে। বাদি সাজেদা সাজু তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ১০ দিন অতিবাহিত হলেও আমার স্বামীর হত্যাকারীদের পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। আসামীরা হাই কোর্টে গেল, আসামীরা দল বেধে আবার বরগুনা ফিরে এসেছে। অথচ পুলিশ আসামীদের খুঁজে পায়নি। অন্য পাঁচজন আসামী ঘুরে বেড়ায়। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়। তাদের গ্রেফতার করার দাবি জানাই। একই সাথে আসামীরা যে যে গণমাধ্যমে কাজ করতেন তাদের প্রতি আহবান তারা যেন আসামীদের চাকরী থেকে বাদ দেয়। আমি আসামীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।