বরগুনা ব্যুরো:
নারীদের রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বরগুনাস্থ নারী নেতারা শনিবার সকালে বরগুনা প্রেসক্লাবে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বরগুনা জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হোসনে আরা চম্পা এবং জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক রঞ্জু-আরা-শিপু। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এমএএফ সভাপতি চিত্ত রঞ্জন শীল, এমএফ সাধারণ সম্পাদক মো. সাহাবুদ্দিন সাবু, ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের ডেপুটি ডিরেক্টর দিপু হাফিজুর রহমান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক কমিটির মূলদলে শতকরা ৩৩ শতাংশ নারী অন্তর্ভূক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নারী অন্তর্ভূক্তির জন্য এডভোকেসি সভা করে আসছে৷ তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বরগুনার নারী নেতাদের পক্ষে নারীর ক্ষমতায়ন উপ-কমিটি তাদের নিজ নিজ দলীয় সিনিয়র নেতাদের কাছে নিজ নিজ দলের নেতা-কর্মীদের সমর্থন সম্বলিত গণস্বাক্ষরসহ আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত মাল্টিপার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (এমএএফ) হল নারীর ক্ষমতায়ন উপ-কমিটি৷ ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল-এর এসপিএল প্রকল্পের আওতায় এবং ইউএসএআইডি-এর অর্থায়নে এমএএফ নারীর ক্ষমতায়ন উপ-কমিটি নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কিছু কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে। সেই কর্মপরিকল্পনার একটি অন্যতম পরিকল্পনা ছিল রাজনৈতিক কমিটির মূলদলে শতকরা ৩৩ শতাংশ নারী অন্তর্ভূক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এডভোকেসি সভা করা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ২০০৯ (আরপিও)-এর ৯০ এর বি ধারা অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যেই সকল পর্যায়ের মূলদলের কমিটিগুলোতে শতকরা ৩৩ শতাংশ নারী অন্তভূর্ক্তি বাধ্যতামূলক ছিল৷ যদিও তা দলগুলো এখন পর্যন্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারেনি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০১৯ সালের সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিটি ইউনিট কমিটিতে অন্তত শতকরা ৩৩ শতাংশ নারী অন্তর্ভূক্তির নির্দেশনা রয়েছে৷ অন্যদিকে, ২০২১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি শতকরা ৩৩ শতাংশ নারী অন্তর্ভূক্তির লক্ষ্যে সকল বিদ্যমান জেলা ও মহানগর কমিটিতে আরও ১৫ শতাংশ নারী অন্তর্ভূক্তির নির্দেশনামূলক একটি চিঠি কেন্দ্র থেকে পাঠানো হয়।
নেতারা বলের, বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ এবং বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কোনটারই পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই৷ বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের ৩ সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি এবং বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী দলের বর্তমানে কোন কমিটি নেই। এই অবস্থায় সামনের পূর্ণাঙ্গ মূলদল কমিটিতে শতকরা ৩৩ শতাংশ নারী অন্তর্ভূক্তির সুযোগ রয়েছে৷ তাই এই সময়টাকে নারীর ক্ষমতায়ন উপকমিটি নারী অন্তর্ভূক্তির এডভোকেসির জন্য আদর্শ সময় মনে করেছে৷ এজন্য এমএএফ, বরগুনা ও ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের সহায়তায় নারীর ক্ষমতায়ন উপকমিটির নারী নেতৃবৃন্দ পৃথক দুইটি পিটিশন প্রস্তুত করেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের জন্য৷ পিটিশনে নিজ নিজ দলের নেতা-কর্মীদের গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন উপ-কমিটির নারী নেতৃবৃন্দ৷ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পিটিশন বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির নিকট হস্তান্তর করেন নারীর ক্ষমতায়ন উপ-কমিটির আওয়ামী লীগের নারী নেতৃবৃন্দ৷ অপরদিকে বরগুনা জেলা জাতীয়তাবাদী দলের কোনো কমিটি না থাকায়, বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় নেতা বিলকিস জাহান শিরিনের নিকট পিটিশন জমা দিয়েছেন নারীর ক্ষমতায়ন উপকমিটির বিএনপির নারী নেতৃবৃন্দ৷
নারী নেতারা বলেন, উভয় দল থেকে পর্যাপ্ত নারী অন্তর্ভূক্তির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিগত দিনে বরগুনা জেলা কমিটিতে ১১ শতাংশ নারী অন্তর্ভূক্ত ছিল এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের বিগত দিনে বরগুনা জেলা আহ্বায়ক কমিটিতেও ১০ শতাংশ নারী অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল। পরবর্তী কমিটিগুলোতে শতকরা ৩৩ শতাংশ নারী অন্তর্ভূক্ত করার জন্য নারী নেতারা জোর দাবি জানিয়ে আসছেন।
প্রেস নোট পাঠ করেন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কাশপিয়া দেবনাথ ও বিএনপি থেকে রঞ্জু-আরা-শিপু।