বরগুনা ব্যুরো:
এক চেয়ারম্যান কিশোরীকে স্ট্যাম্পে লিখিত দিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে একাধিক বার ধর্ষণ করে। ওই ধর্ষণের ভিডিও অপর দুই চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্র লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকের নিকট দিলে তারাও কিশোরীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এমন অভিযোগে চারজনের বিরুদ্ধে গণধর্ষেণের মামলা করেছে কিশোরীর বাবা।
বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও সিনিয়র জেলা জজ মো: মশিউর রহমান খান বুধবার মামলাটি গ্রহন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান পটুয়াখালীকে সাত দিনের মধ্যে অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
আসামীরা হল, বরগুনা জেলার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়ীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া, পচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মোঃ আঃ রাজ্জাক হাওলাদার, তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রেজবি উল কবীর জোমাদ্দার, ও তালতলী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠু। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তাফিজুর রহমান।
জানা যায়, আমতলী উপজেলার বাসিন্দা ওই ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করেন, তার ১৭ বছরের নাবালিকা মেয়ের সঙ্গে চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়ার ফোনে পরিচয় হয়। সেই পরিচয় সূত্র ধরে বাদির মেয়েকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঢাকার বিভিন্ন হোটেলে ও ঢাকা বরিশাল গামি লঞ্চে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে। কৌশলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখে ওই চেয়ারম্যান। ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বাদির মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। বাদির মেয়ে বাচ্চু চেয়ারম্যানকে বিয়ের জন্য অনুরোধ করলে বিয়ে করতে রাজি হয়নি। কিশোরী বেশী বাড়াবাড়ি করলে ওই ভিডিও গুলো চেয়ারম্যান মোঃ কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া চেয়ারম্যান মো: আবদুর রাজ্জাক, উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবি উল কবির ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল আবেদীন মিঠুকে দেয়।
চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া
৮ এপ্রিল রাত অনুমান ৮ টার সময় বাদির মেয়েকে তালতলী উপজেলার পচাতোড়ালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আঃ রাজ্জাক হাওলাদারের বাসায় আসতে বলেন, চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক হাওলাদারের বাসার একটি কক্ষে বাদির মেয়েকে আটকিয়ে পালাক্রমে ওই চারজনে ধর্ষণ করে। তখনও বাদির মেয়ের ধর্ষণের ভিডিও তারা ধারণ করে রাখে।
বাদি বলেন, আমার মেয়ে কৌশলে ধর্ষকদের হাত থেকে ছুটে আসে। আমি তালতলী থানায় মামলা করতে গেলে থানা মামলা নেয়নি। উপরন্তু আমার মেয়ের বিরুদ্ধে কামরুজ্জামান বাচ্চু মিয়া পর্ণগ্রাফি আইনে মিথ্যা মামলা করে। ওই ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলখানা থেকে আমার মেয়েকে তলব দিয়ে আদালতে তুলেন। আমার মেয়ে আদালতে বলেছে ওই আসামীরা তাকে ধর্ষণ করেছে। আসামী কামরুজ্জামান বাচ্চু, উপজেলা চেয়ারম্যান রেজবি উল কবিরসহ আসামীরা বলেন, সুপার এডিট করে আমাদের নামে ভিডিও বানিয়ে আমাদের শত্রুপক্ষ আমাদের মান সম্মান নস্ট করেছে। আমরা কোনো অপরাধ করিনি।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম খান বলেন, এ ব্যাপারে থানায় কেহ মামলা করতে আসেনি। মামলা করতে আসলে অবশ্যই মামলা নিতাম। বাদি আমাদের নামে অসত্য তথ্য দিয়েছেন।