অনলাইন ডেস্ক:
কারসাজির মাধ্যমে সারা দেশে ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি চক্র ‘ঢালী সিন্ডিকেটের’ মূলহোতা মিজান ঢালী এবং সহজ ডটকমের এক কর্মকর্তাসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।এ সময় উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ ট্রেনের টিকেট, নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও জাতীয় পরিচয়পত্র।
রাজধানীর কমলাপুর ও সবুজবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক হিসেবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
মিজান ঢালী ও সার্ভার অপারেটর নিউটন বিশ্বাসসহ ওই ৯ জন ট্রেনের টিকেট কেটে দ্বিগুণ মূল্যে কালোবাজারি করে বিক্রি করতো বলে র্যাব জানিয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে রয়েছে- মূলহোতা মো. মিজান ঢালী, তার প্রধান সহযোগী, মো. সোহেল ঢালী, মো. সুমন, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. শাহজালাল হোসেন, মো. রাসেল, মো. জয়নাল আবেদীন, মো. সবুর হাওলাদার ও নিউটন বিশ্বাস।
র্যাব বলছে, মূলহোতা মিজানের নেতৃত্বে এই চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রায় সব ট্রেনের টিকেট কালোবাজারি করে আসছিলো। ঢালী সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টিকিট কেটে নিতো। আর এবারের ঈদের সময়ে তা হাজারে নেয়ার টার্গেট ছিলো।
মিজান দীর্ঘদিন ধরে রেলের টিকেট বুকিংয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করে আসছে। ২০০৩ সালে সে ডেফোডিলের কমলাপুর স্টেশন শাখায় পিয়ন হিসেবে যোগ দেয়।
সর্বশেষ ২০২০ সালে রেলওয়ে টিকেট বিক্রির জন্য সহজ ডটকমের সঙ্গে চুক্তি হলেও সেখানেও চাকরি শুরু করে মিজান।
জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পেরেছে যে, দীর্ঘদিন টিকেট বিক্রির চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকায় সারাদেশব্যপী বিভিন্ন স্টেশনের সহজ ডটকমের অফিসের ও বড় বড় রেলওয়ে স্টেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে।
আর এ সূত্র ধরেই সে বিভিন্ন স্টেশন থেকে কালোবাজারি চক্রের সদস্যদের সমন্বয়ে কারসাজির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ টিকেট বিক্রি করতো। বিশেষ করে ঈদ, পূজা, সাপ্তাহিক ছুটিসহ বিশেষ ছুটির দিনকে উপলক্ষ্য করে ঢালী সিন্ডিকেট কারসাজির মাধ্যমে বিপুল টিকেট সংগ্রহ করতো।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, প্রতিবছর ঈদের মৌসুমে দেশব্যাপী তারা আনুমানিক দুই থেকে তিন টিকেট কালোবাজারি করে বিক্রি করতো। আসন্ন ঈদেও একই পরিকল্পনা ফেঁদেছিল তারা।
আর অবৈধভাবে বিক্রি করা টিকেটের লাভের অংশ ভাগ হতো দুইভাবে। অর্ধেক অর্থ পেতো সহজ ডটকম ও রেলওয়ে স্টেশনের টিকেট কাউন্টারম্যানরা। আর অর্ধেক যেতো মিজান, সোহেলসহ চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে।
এই অর্থ কখনো তারা নগদে আবার কখনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে লেনদেন করতো।
গ্রেপ্তার সোহেল সহজ ডটকমের অফিস সহকারী। মিজান তাকে আত্মীয় হিসেবে পরিচয় দিয়ে চোকরিতে ঢুকিয়েছিলেন। পরে সোহেলই ঢালী সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য হয়ে ওঠে।
তথ্য এবং ছবি- একাত্তর অনলাইন।