ঝড়ে গাছপালা ভেঙে ও বজ্রপাতে নিহত অন্তত ১০

BanglaPost21
ছবি সংগৃহীত

অনলাইন ডেস্ক:
হঠাৎ ঝড়ে গাছপালা ভেঙে ও বজ্রপাতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ছয় জেলায় কমপক্ষে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত আরো বেশ কয়েকজন।

গাছপালা ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও ফসলের ক্ষেত। মহাসড়কে যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে বহু এলাকা।

রোববার সকালের হঠাৎ করেই শুরু হয় দমকা হাওয়াসহ ঝড়। সঙ্গে চলে বজ্রসহ বৃষ্টি। কয়েক মিনিট স্থায়ী ঝড় বৃষ্টিতে বরিশাল, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, খুলনা, বাগেরহাট ও ভোলায় ১০ জনের মৃত্যু হয়।

সকাল ১০টা দিকে পিরোজপুর সদরে ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। আকস্মিক ঝড়ে গাছচাপা পড়ে মারা যান রুবি বেগম নামের এক নারী।

তীব্র বাতাসের বড় গাছ ভেঙে পড়ে ইউপি সদস্য হারুন শেখের বাড়ির ওপর। এতে দুইতলা টিনের বাড়ি মাঝ বরাবর ধসে যায়। এতে গাছের চাপায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন রুবি বেগম।

পটুয়াখালীতে কালবৈশাখী ও বজ্র ঝড়ে দুজন নিহতসহ বিভিন্ন স্থানে গাছপালা ভেঙে ও উপড়ে পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

বাউফলের নাজিরপুর ইউনিয়নের তাতেরকাঠী গ্রামে বজ্রপাতে নিহত হয়েছেন নবম শ্রেণীর ছাত্র রাতুল। দাসপাড়া ইউনিয়নের বাহের দাসপাড়া গ্রামে  গাছ চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন বৃদ্ধা সাফিয়া বেগম।

ঝালকাঠিতে বজ্রপাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। ঝড়ের সময় মাঠ থেকে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ হারান কাঁঠালিয়া উপজেলার গৃহবধু হেলেনা বেগম, সদর উপজেলার পোনাবালিয়া এলাকার ঈষানা ও শেখেরহাট গ্রামের গৃহবধূ মিনারা বেগম।

বা‌গেরহা‌টে কাল‌বৈশাখী ঝড় ও বজ্রপা‌তে এক কৃষক নিহত ও অসংখ্য ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝ‌ড়ের সময় কচুয়া উপ‌জেলার ম‌ঘিয়ায় বজ্রপাতে নিহত হন লিকচান সরদার (৩৫) না‌মে এক কৃষক।

খুলনাতেও ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ঢাকাসহ দেশের আরো কয়েক জায়গায় বৃষ্টিরে সঙ্গে বয়ে গেছে দমকা হাওয়া। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, সকাল থেকেই আকাশ মেঘলা ছিলো। হঠাৎ করে শুরু হয় ঝড়।

খুলনার ডুমুরিয়া উজেলার গুটুদিয়া গ্রামের কোমলপুরে সকাল আটটার দিকে মো. ওবায়দুল্লাহ নামের একজন বজ্রপাতে মারা যান।

এদিকে, ভোলার লালমোহনে কালবৈশাখী ঝড়ে গাছ উপড়ে ঘরের ওপর পড়ায় হারিস নামের এক ভিক্ষুক ও বজ্রপাতে বাচ্চু নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট, দাসেরহাট, সেনারচর, দক্ষিণ সাকুচিয়া ও পূর্বসোনারচর এলাকায় এবং তজুমদ্দিন‌ উপজেলার সম্ভপুর এলাকায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ঝড়ে অনেক জায়গায় গাছ পড়ে বরিশাল-পিরোজপুর সড়কে ব্যাহত হয় যানবাহন চলাচল। পরে রাস্তার ওপর থেকে গাছ সরানোর কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস ও রেড ক্রিসেন্টের কর্মীরা।

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আগে জানানো হয়েছিলো, রোববার রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দুএক জায়গায় অস্থায়ী দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

সেই সাথে কোথাও কোথাও হতে পারে শিলাবৃষ্টি। এতে তাপমাত্রা এক থেকে দুই ডিগ্রি কমে আসতে পারে। তবে এপ্রিল মাস জুড়েই তাপপ্রবাহ চলবে এবং এবারের ঈদে সময় অন্যবারের তুলনায় গরম বেশি থাকবে বলেও আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

আবহাওয়া অফিস আরো জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বাড়তি অংশ হিমালয় পাদদেশের পশ্চিমবঙ্গ ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

সেজন্য পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা, যশোর, খুলনা, ফরিদপুরসহ ১২ জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তরপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে দুই নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সেজন্য পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা, যশোর, খুলনা, ফরিদপুরসহ ১২ জেলার ওপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তরপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এ সময় বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। তাই এসব এলাকার নদীবন্দরগুলোকে দুই নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

তথ্য- একাত্তর অনলাইন।